Thursday, March 23, 2023

অর্জুন শিবিরে ঝুঁকতেই ব্লক সভাপতির পদ হারাতে হল রানাকে !


বিল্টু কাশ্যপঃ অভিজিতের পর এবার কোপ পড়ল রানার ঘাড়ে।  সাংসদ শিবিরে ঝুঁকতেই ছেটে ফেলা হল রানা-কে। তাঁর জায়গায় এলেন পূর্বতন ব্লক সভাপতি তথা কাঁপা-চাকলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রবি নিয়োগী। 

প্রসঙ্গত, তৃণমূল গঠনের পর থেকেই ব্যারাকপুর ব্লক-১ এর ঋষি বঙ্কিম ব্লক তৃণমূল সভাপতি ছিলেন রবি নিয়োগী। ২০২১ সালে রবির জায়গায় আনা হয়েছিল তরুণ নেতা রানা দাশগুপ্তকে। কিন্তু আচমকা পদ থেকে অপসারিত করা হল রানাকে। সাংসদ শিবিরে ঝুঁকতেই কি রানার কোপ পড়ল, তা নিয়ে জোর চর্চা চলছে নৈহাটির গ্রামীন অঞ্চল জুড়ে।

 সূত্র বলছে, রাজ্যের সেচমন্ত্রী তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত রবি নিয়োগী। যদিও ইদানিং ব্যারাকপুর সংসদীয় কেন্দ্রের বিভিন্ন অনুষ্ঠান মঞ্চে সাংসদের পাশেই দেখা যাচ্ছিল রানাকে। যদিও রানার প্রতিক্রিয়া জানার জন্য ওনার মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু উনি ফোন ধরেন নি।

 তবে ফেসবুক পোস্টে বিদায়ী রানা দাশগুপ্ত  লিখেছেন, 'এই মাটিতে খেলা হবে। আমিও আছি, তুমিও রবে বন্ধু। এবার খেলা হবে। তৈরি থেকো খেলা হবে। ময়দানে খেলা হবে। ঝান্ডা কাঁধে খেলা হবে।' যদিও খেলার বিষয়ে তিনি খোলসা করে কিছুই লেখেননি। 

সম্প্রতি রক্তদান শিবির কিংবা নিজেদের বাড়ির কালি পুজোয় সাংসদের পাশেই দেখা গিয়েছিল নৈহাটির তৃণমূল যুব নেতা অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। গণ্ডগোলে জড়িয়ে সাংসদের ঘনিষ্ঠ হওয়ার খেসারত দিতে হল অভিজিৎকে।

 যদিও নতুন তৃণমূলের তকমা লাগিয়ে ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করছেন নৈহাটি তৃণমূলের একাংশ। তারা দাবি করলেন, অন্যায় করলে আইন আইনের পথেই চলবে। তবে বামআমলে নৈহাটির ত্রাস বলে একদা যারা নাচুকে তুলোধনা করতেন, তাদের একাংশই এখন নাচুকে তলে তলে মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগও উঠেছে। 

বিজেপি নেত্রীর স্বামী নাচুকে পেটানোর অভিযোগে পুলিশি হেফাজতে পুরপ্রধানের পুত্র অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়। এই ঘটনায় পুলিশের অতি সক্রিয়তা ভাবাচ্ছে শাসকদলের একাংশকে। নতুন তৃণমূলের নিয়ম লাগু গোটা রাজ্য জুড়েই, নাকি নৈহাটির মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

Tuesday, March 21, 2023

এবার ইডির নজরে নৈহাটীর শ্বেতা চক্রবর্তী

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির নজরে নৈহাটীর শ্বেতা চক্রবর্তীর নাম। নৈহাটির ৭-ডি বিজয়নগর জেলেপাড়া এলাকার বাসিন্দা। বাবা অরুন চক্রবর্তী ওরফে বাবলু স্বাস্থ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। 

 জানা গিয়েছে, শ্বেতা পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। ২০১৬ সালে কামারহাটি পৌরসভায় চাকরি পায়। এছাড়াও মডেলিং করত সে। সেখানেই তার সাথে পরিচয় হয় ইডির হেফাজতে থাকা অয়ন শীলের। এমনকি অয়নের যত প্রোমোটিংয়ের ব্যবসা আছে তার সঙ্গে যুক্ত নৈহাটীর শ্বেতা চক্রবর্তী। 

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, অয়ন শীলের টাকায় একটি চার চাকা গাড়িও রয়েছে তার। এমনকি অয়নের ব্যাংক একাউন্ট থেকে  শ্বেতার একাউন্টে টাকা লেনদেনের হদিস মিলেছে হলে ইডি সূত্রে খবর।

 তবে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় হঠাৎ পাড়ার মেয়ের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় হতবাক নৈহাটির জেলেপাড়ার বাসিন্দারা। তবে সম্প্রতি এলাকার মেয়ের জীবন যাপন নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলা শুরু করেছে স্থানীয় মানুষজন।

Monday, March 20, 2023

তৃনমূল সংখ্যালঘু সেলের কর্মী সন্মেলনে উপস্থিতি নগন্য আমডাঙায়, কিসের ইঙ্গিত !

বিল্টু কাশ্যপঃ ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের আমডাঙা বিধানসভা বরাবরই তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি। কিন্তু আই এস এফের বাড়বাড়ন্তে কি সংখ্যালঘুরা ক্রমশঃ শাসকদল থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে, এখন সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। 

রবিবার দমদম-ব্যারাকপুর  সংগঠনিক জেলার তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের উদ্যোগে আমডাঙা বিধানসভা কেন্দ্রের আওয়ালসিদ্ধি বাজারে কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। উক্ত সম্মেলনের মঞ্চে আই এস এফ ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন জনাব জামাল উদ্দিন। যিনি গত বিধানসভা নির্বাচনে ওই কেন্দ্রের আইএসএফ প্রার্থী ছিলেন। 

সূত্র বলছে, সংখ্যালঘুদের আঁতুরঘর আমডাঙা। অচল তৃণমূলের সংখ্যালঘু সম্মেলনে উপস্থিতির হার খুবই কম ছিল। বলা বাহুল্য, প্রকাশ্যে কেউ কিছু না বললেও, কর্মী সম্মেলনে মনপ্রুত উপস্থিত না হওয়ায় শাসকদলের কপালে কিন্তু চিন্তার ভাঁজ পড়বেই। 

শাসকদলের ভোট ব্যাঙ্কের ভিত্তি বলতে সংখ্যালঘুরা। কিন্তু আওয়ালসিদ্ধিতে কর্মী সম্মেলনে উপস্থিতির হার এত কম, কিসের ইঙ্গিত বহন করছে, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। সূত্র বলছে, নিয়োগ দুর্নীতির জেরে সংখ্যালঘুরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে ঘাসফুল থেকে। বিকল্প হিসেবে কেউ বাম শিবিরে, বেশি সংখ্যক আবার ঝুঁকছেন আই এস এফে। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে গ্রেপ্তার  ঠিকভাবে মেনে নিতে পারেনি সংখ্যালঘুরা। ফুরফুরা শরিফের পীরজাদারাও নওশাদের হয়ে ব্যাট করতে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। নওশাদের লড়াকু মনোভাব বেশ প্রভাব ফেলেছে সংখ্যালঘুদের মনে। স্বভাবতই, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ঘাসফুলের সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কে থাবা বসাতে পারে আই এস এফ। তা নিয়েই উদ্বিগ্ন ঘাসফুল শিবির। 

তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে সংগঠনে রদবদল করে শাসকদল কতটা সংখ্যালঘু ভোট ধরে রাখতে পারে, সেটাই এখন দেখার। যদিও পুলিশ পাহারায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হলে সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ক নিয়ে হিসেব-নিকেশ মিলবে না। কারন, শাসকদল বলপূর্বক ভোট লুঠ করার মরিয়া প্রয়াস চালাবে পঞ্চায়েতে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সমস্ত হিসেব-নিকেশ পরিষ্কার হয়ে যাবে।

Thursday, March 16, 2023

নৈহাটিতে ধৃত পুরপ্রধানের পুত্রের দাবি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার, অঙ্ক কি মিলছে!

বিল্টু কাশ্যপঃ খেলা জমে উঠেছে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের শহর নৈহাটিতে। বুধবার রাতে নৈহাটির নদীয়া মিল সংলগ্ন কৃষ্ণকুঞ্জ অনুষ্ঠান বাড়ির সামনে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। সেই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে সূত্রে খবর। 

অভিযোগ উঠেছে, নৈহাটির পুরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায়ের পুত্র অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দলবল বিজেপি নেত্রী সম্পা সরকারের স্বামী সৌমেন সরকার ওরফে নাচুর ওপর সশস্ত্র অবস্থায় হামলা চালিয়েছে। 

যদিও পাল্টা হামলার অভিযোগ অভিজিৎ শিবিরের। উভয়পক্ষই ঘটনার দিন রাতে একে অপরের বিরুদ্ধে নৈহাটি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।  সঙ্গী সুরজিৎ দাসকে নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় থানায় আত্মসমর্পন করেন। 

ঘটনা নিয়ে ধৃত নৈহাটির তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, তিনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। পুত্রের সূরে সূর মিলিয়ে পিতা পুরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায়ও দাবি করলেন, তাঁর পুত্র রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। কিন্তু চক্রান্তের বিষয়ে খোলসা করে কিছুই বললেন না পিতা-পুত্র। অভিজিৎ যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে, তাদেরকেও গ্রেপ্তারের দাবি করলেন অশোক চট্টোপাধ্যায়। 

কিন্তু ঘটনার নেপথ্য অন্য কথা বলছে। সূত্র বলছে, নৈহাটিতে শাসকদলের চাপা কোন্দল চলছে। সংঘর্ষের ঘটনায় সুকৌশলে ঝোপ বুঝেই কোপ মেরেছে শাসকদলের একাংশ। কিন্তু ধৃতের পিতা অশোক চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলছেন, তাঁর পুত্র বিজেপি দলের চক্রান্তের শিকার। 

নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, নৈহাটির তৃণমূল যুব সভাপতির দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন পুরপ্রধানের পুত্র অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়। দৌড়ে আছেন বিষ্ণু অধিকারীও। তাহলে অভিজিৎকে আটকাতেই কি এই ফন্দি, তা নিয়েই নৈহাটি জুড়ে জোর চর্চা চলছে। 

প্রসঙ্গত, রাজ্যে শাসকদলের পুরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায়। তা সত্ত্বেও, গ্রেপ্তার  পুত্র অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়। আর অভিজিতের গ্রেপ্তারি নিয়ে বিমূর্ষ হয়ে পড়েছেন পুরপ্রধান অনুগামীরা। তাহলে কি নৈহাটিতে অন্য সমীকরণ চলছে ? পুত্রের যুব সভাপতির দৌড় নিয়ে অশোক চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ওকে রাজনৈতিক স্বীকৃতি না দেওয়া হলে, এটা ওর দুর্ভাগ্য এবং আমারও দুর্ভাগ্য। 

সূত্র বলছে, কয়েকদিন আগে দোগাছিয়াতে একটি রক্তদান শিবিরে সাংসদ অর্জুন সিংয়ের পাশে বসে কথা বলতে দেখা গিয়েছিল অভিজিতকে। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালও হয়েছিল। শুধু তাই নয়, দিন সাত-আটেক আগে পুরপ্রধানের বাড়ির কালী পুজোয়ও হাজির ছিলেন ব্যারাকপুর কেন্দ্রের সাংসদ। 

অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে এত দহরমের কারনেই কি কারো চক্ষুশূল হলেন পিতা-পুত্র ! অভিজিত গ্রেপ্তারি হতেই নৈহাটি জুড়ে তা নিয়েই কানাঘুষো চলছে।

Wednesday, March 15, 2023

সি আই সি'রা বৈঠক বয়কট করলেন ভাটপাড়া পুরসভায়

 
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ অধিকারিকদের সঙ্গে মতানৈক্যর জেরে সিআইসি বৈঠক বয়কট করলেন ভাটপাড়ায়। বুধবার ছিল ভাটপাড়া পুরসভার সিআইসি বৈঠক। 

কিন্তু বৈঠক শুরু হতেই  বিওসি রুম থেকে বেরিয়ে এলেন উপ-পুরপ্রধান দেবজ্যোতি ঘোষ, পূর্ত দপ্তরের সিআইসি অরুন ব্রহ্ম, জল দপ্তরের সিআইসি অমিত গুপ্তা, জঞ্জাল বিভাগের সমর পাঠক, স্বাস্থ্য বিভাগের নূরে জামাল ও বিদ্যুত দপ্তরের সিআইসি হিমাংশু সরকার।

 যদিও বৈঠক বয়কট নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন সিআইসি-রা। বয়কট প্রসঙ্গে উপ-পুরপ্রধান দেবজ্যোতি ঘোষ বলেন, বোর্ডের সঙ্গে মতানৈক্য চলছিল। তাছাড়া পুরসভার অধিকারিকরা সিআইসি-দের কথা শুনেছন না।

হালিশহরে পোর্টালের দৌরাত্ম্য তুঙ্গে, তবুও চোখে পড়ল না জলাশয় ভরাট

বিল্টু কাশ্যপঃ বীজপুর কেন্দ্রের হালিশহর ও কাঁচড়াপাড়ায়  'গুমটি দোকানে'র মতোই গজিয়ে উঠেছে একের পর এক নিউজ পোর্টালের অফিস। কিন্তু সমাজকে সফেদ করার লক্ষ্যে পোর্টালের প্রতিনিধিদের ভূমিকা খুবই নিষ্ক্রিয় বলে দাবি উঠেছে। 

স্থানীয়দের একাংশের মতে, বুম-মোবাইল নিয়ে জনপ্রতিনিধি কিংবা নেতাদের পিছনে ছুটতে ব্যস্ত পোর্টালের প্রতিনিধিরা। বিনিময়ে জুটছে কোথাও বকশিস কিংবা আহার অথবা সংবর্ধনা। এতেই ওরা সন্তুষ্ট। কিন্তু বীজপুর জুড়ে বেআইনি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ওরা ভাতঘুমের ভূমিকায়। তবে মাঝে-মধ্যে দু-একটি পোর্টাল অন্যায়ের মৃদু ফোঁস করে ওঠে। কোনও অদৃশ্য কারনে ফের ওরা নেতিয়ে পড়ে, এমনটাই দাবি বীজপুরবাসীর। 

এবার ঘটনার বিবরনে আসা যাক। আইনের ফাঁক গলে হালিশহর পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কর্নেল কে পি গুপ্তা রোডের চিত্তরঞ্জন মোড় সংলগ্ন জল ট্যাঙ্কের পাশে বুজে গিয়েছে বিশালাকার জলাশয়। আর সেই জলাভূমি বুজে তৈরি হচ্ছে আবাসন। অথচ উদাসীন প্রশাসন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকদের বক্তব্য, শুধু প্রশাসন কেন, সমাজের দর্পন পোর্টালের কারবারিরাও নিশ্চুপ। দর্শকের ভূমিকা মেইনস্টিম মিডিয়ার প্রতিনিধিরাও। 

এমনকি বিরোধীরা জলাশয় ভরাটের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছে না। ফলত ফাঁকা মাঠে দেদার গোল দিয়ে চলেছে জমি হাঙরেরা। 
যদিও পিছনে অদৃশ্য শাসকের হাত আছে বলেই অবৈধ কারবারে বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে না হাঙরদের। এমনটাই অভিযোগ বাসিন্দাদের।

 বিজেপির রাজ্য সম্পাদিকা ফাল্গুনী পাত্রের অভিযোগ, শুধু হালিশহর নয়, রাজ্যের সর্বত্র জলাশয় ভরাট হয়ে আবাসন গড়ে উঠছে। জমি মাফিয়ারা ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার অফিস থেকে জমির চরিত্র পাল্টে ফেলছে। পুকুর কিংবা জলাভূমি ভরাট রুখতে  আগে ভূমি সংস্কার অফিসের লোকজনের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। 

তবে নিজের ওয়ার্ডে জলাশয় ভরাট নিয়ে সুকৌশলে এড়িয়ে গিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস। তার দাবি, তাঁর ওয়ার্ডে এইরকম কিছুই হচ্ছে না। তবুও জলাশয় ভরাট নিয়ে তিনি খোঁজ-খবর নেবেন বলে জানান।

Thursday, March 9, 2023

বীজপুরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার নাকি ইউনাইটেড তৃণমূল, প্রশ্ন দলের অন্দরেই


বিল্টু কাশ্যপঃ স্থানীয় দু-একটি পোর্টালের দাবি, বীজপুর নাকি এখন ইউনাইটেড তৃণমূল। কিন্তু আদৌ কি তাই! বাস্তব চিত্র কি বলছে?

 বীজপুর বিধায়ক সুবোধ অধিকারীর বাসভবনে হোলি উৎসবে মাততে দেখা গিয়েছে হালিশহরের পুরপ্রধান রাজু সাহানী, উপ-পুরপ্রধান শুভঙ্কর ঘোষ, সিআইসি হিমানীশ ভট্টাচার্য, কাঁচারপাড়ার পুরপ্রধান তথা বিধায়ক ভ্রাতা কমল অধিকারীদের।

 কিন্তু বাকিদের উপস্থিতি তো চোখেই পড়লো না। তবুও বিধায়কের বাড়ির হোলি উৎসবের ছবি দেখিয়ে স্থানীয় শাসক ঘনিষ্ঠ কিছু পোর্টাল জোরের সঙ্গে দাবি করেছে, ভেদাভেদ ভুলে বীজপুর এখন ইউনাইটেড তৃণমূল। আর এই খবরে আড়ালে-আবডালে টিপ্পনি কাটছেন বিরোধী শিবির ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরাও। 

এবার একটু আলোকপাত করা  যাক ইউনাইটেড তৃণমূল নিয়ে। কাঁচড়াপাড়ার উপ-পুরপ্রধান তথা প্রাক্তন বিধায়ক শুভ্রাংশু রায় থেকে শুরু করে কাউন্সিলর  মৃত্যুঞ্জয় দাস, প্রণব লোহ, সুজাতা দাস এরা কি বিধায়ক শিবিরে, নাকি বিরোধী শিবিরে  প্রশ্ন দলেরই একাংশের।

 প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে মৃত্যুঞ্জয় দাসের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছিল। সেইসময় ব্যারাকপুর কেন্দ্রের সাংসদ অর্জুন সিং ও কাঁচড়াপাড়ার উপ-পুরপ্রধান শুভ্রাংশু রায়কে মৃত্যুঞ্জয়ের পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছিল। সূত্র বলছে, তৃণমূল নেতা সুজিত দাস থেকে শুরু করে তৃণমূল নেত্রী আলো রানী সরকার, সোনালী সিংহ রায়, সোমা দাসরা  বিরোধী শিবির হিসেবেই পরিচিত। 

নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, সুজিত দাস, সোমা দাস শিবির এখন সাংসদ অর্জুন সিং শিবিরে। অতি সম্প্রতি ভাটপাড়ায় বসন্ত উৎসবের উদ্বোধনে সাংসদের পাশে দেখা গিয়েছে সুজিত-সোমাদের। কয়েকদিন আগে বীজপুরের কুমোর পাড়ায় সুজিতের শিক্ষাসামগ্রী প্রদান অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন সাংসদ অর্জুন সিং। 

স্বভাবতই, বীজপুরে শাসকের বাস্তব চিত্র নিয়ে পর্যালোচনা করলে পরিষ্কার ফুটে উঠবে 'ইউনাইটেড তৃণমূলে'র বদলে দুইয়ের অধিক বিভক্ত তৃণমূল। কিন্তু একশ্রেণীর পোর্টাল কাউকে খুশি করতে গোষ্ঠীদ্বন্দ ধামাচাপা দিয়ে ঐক্যের চিত্র তুলে ধরার মরিয়া প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।  

এবার আসা যাক, হালিশহরের পুরপ্রধানের কথায়। চিটফান্ড কাণ্ডে নাম জড়িয়ে পড়ার পর থেকেই পুরসভার মসনদে বসছেন না পুরপ্রধান রাজু সাহানি। ওই কেসে তাঁর  জামিন মেলার পরও কোনও অদৃশ্য কারনে পুরসভায় যাচ্ছেন না বলেই বীজপুরে কানাঘুষো চর্চা চলছে।

যদিও সম্প্রতি হালিশহর ১৭নম্বর ওয়ার্ডে প্রাক্তন কাউন্সিলর বন্ধুগোপাল সাহার বাড়িতে এসে 'খবর যুগান্তর'কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সাংসদ অর্জুন সিং বলেছেন, ওর যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে। কার ভয়ে ও পুরসভায় যাচ্ছে না, তা বুঝতে পারছি না। সাংসদের সংযোজন ছিল, রাজু তো লড়াই করা ছেলে। দল তো ওকে পদ থেকে সরায় নি। তবুও রাজুর পুরসভায় অনুপস্থিতি নিয়ে হতবাক সাংসদের মতোই শাসকদলের অনেকেই। 

সূত্র বলছে, 'নকল ড্রেনডাইট' আঠা লাগিয়ে জোড়াতাপ্পি দিয়ে কেউ কেউ ইউনাইটেড তৃণমূল বোঝানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। লক্ষ্য, শিবির ত্যাগ করে যাতে কেউ অন্য শিবিরে না চলে যায়। কিন্তু এভাবে ক্ষমতাসীন শিবির কাউকেই ধরে রাখতে পারবে না বলেই খবর রাজনৈতিক মহলে। সূত্র বলছে, অনেকেই তলে তলে ঝুঁকে গিয়েছেন সাংসদ শিবিরে। 

তবে বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, আগামী দু-তিনমাসের মধ্যেই শুধু বীজপুর নয়, গোটা লোকসভা কেন্দ্র জুড়েই ওলট-পালট 'ইউনাইটেড' প্রকাশ্যে এসে পড়বে।

 ধরে নেওয়া যাক, আগামীদিনে বীজপুরে রাজনৈতিক সমীকরনের বদল ঘটলো। তখন কি কেউ কেউ শিরদাঁড়া ভেঙে নতুন সমীকরনের জার্সি গায়ে পড়বেন? অতীতে আগে যেমনটা দেখা গিয়েছিল। বীজপুরের আকাশে-বাতাসে এখন অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে সময়ের প্রতীক্ষায়।