চিত্ত ওঝাঃ করোনা বিধি মেনে চলতে গিয়ে পেটের ভাত জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বড় অংশের মানুষকে। এদের মধ্যে রিকশা, অটো, টোটোসহ পরিবহন শ্রমিক যেমন আছেন তেমনি ক্ষুদ্র ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কারিগর, দোকান কর্মচারী থেকে বহু বেসরকারি ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরাও রয়েছেন। কিভাবে পরিবারের পেট চালাচ্ছেন তা ভুক্তভোগী ছাড়া আর কেবা জানবে। অথচ এরা ভোটে আছে কিন্তু সমস্যার কথা সরকারের কাছে বলার অধিকার নেই। এই অসংগঠিত বড় অংশের মানুষকে রাজনীতিকরা কলাটা, মুলোটা দিয়ে ভুলিয়ে রাখে।
এভাবেই টুকরো টুকরো কথাগুলো ক্রমশ পাহাড়ে পরিনত হয়েছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল জুড়ে। একদা বাম আন্দোলনের উর্বর জমিতে বহুকাল হল জনদরদী নেতা নেই। রাজ্য পাট হারিয়ে দলে দলে বাম নেতাদের শাসকের সঙ্গে ভিড়ে যাওয়ার ছবিটাই অতি সাধারণ মানুষের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। কার্যত সারাদিন উন্নয়নের ভজনা শুনে শুনে বাসিন্দারা কিছুটা খালি পেটে হজম শক্তি বাড়িয়ে তুলেছে।
লকডাউনে কাজ হারিয়েছে বহু মানুষ। বাজার অগ্নি মূল্য। রান্নার তেল আকাশ ছোঁয়া। যত তেল মরছে একটু শিক্ষা দীক্ষা, রুচি নিয়ে সৎভাবে বেঁচে থাকা মানুষদেরই। না পারছে অভাব মুখ ফুটে বলতে, না পারছে নেতাদের কাছে গিয়ে হাত পাততে। এসব দেখে ঠোঁট কাটা প্রজন্ম কটাক্ষ ছুড়ে বলছে, এগিয়ে বাংলা, পিছিয়ে দেশ। মুখ খুললেই মিথ্যা কেস।
অপরদিকে করোনা-লকডাউনের সঙ্গে সমানে পাল্লা দিয়ে চলেছে ভোটের ফল পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসাও। বিজেপি করায় ঘরবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট, মারধরের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে বহু কর্মীকে। সূত্রের খবর, এর পেছনে তোলাবাজির অঙ্ক আছে। যা এ রাজ্যের পরম্পরা। বিজেপির কেষ্ট বিষ্টু হলেতো কথাই নেই ঝান্ডা বদলে উন্নয়নে সামিল হলে সাত খুন মাফ। এখন বেশিরভাগ তল্লাট অভিযোগ শূন্য। কল কারখানা থেকে একশো দিনের কাজে বেছে বেছে বিজেপি সমর্থক বা মনোভাবপন্ন বহু শ্রমিককে বসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের কয়েকটি পৌরসভায় জন্মলগ্ন থেকে তৃনমূল করা কয়েকজন অস্হায়ি কর্মীকে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, এই কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এরা ভোটে দলের হয়ে কাজ করেনি। এরকম এক কর্মীকে পৌরপ্রশাসক আবার বিজেপি বলে দাগিয়ে দিয়েছেন। একদম সুবিধার ধারে কাছ দিয়ে না হাঁটা মানুষদের কথায়, এই সময়ে শাসকের বিরুদ্ধে বলার যোগ্যতা নেই কোনো দলের। সবাই মোয়া খেয়ে বসে আছে। কারো কারো মতে, শহুরে বুদ্ধিজীবীরাতো আরো ভয়ংকর। ওদের দৃষ্টি সবসময় ইউ পি, গুজরাটের দিকেই।