Wednesday, December 6, 2023

অর্জুন প্রার্থী হোক চাইছেন না কতজন, সংখ্যা প্রকাশে চ্যালেঞ্জ আদি‌ অংশের

বিল্টু কাশ্যপঃ তিন রাজ্যে ধরাশায়ী গেরুয়া বিরোধী 'ইন্ডিয়া' জোটের শরিকরা। অপরদিকে বিভিন্ন দুর্নীতি ইস্যুর তদন্তে ক্রমশঃ ঝাঁঝ বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। সূত্র বলছে, লোকসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসবে, কেন্দ্রীয় এজেন্সি ততই প্রকট হয়ে উঠবে। 

আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে রাজ্যে শাসকদলের অনেক হেভিয়েটদের ঠিকানা হতে পারে 'শ্রীঘর' এমনটাই মনে করছেন ওয়াকিবহল মহল। এমত অবস্থায় সাঁড়াশি আক্রমণের মোকাবিলা করতে একমাত্র প্রয়োজন লড়াকু মনোভাবাপন্ন কোনও নেতাকে। 

মিশ্র ভাষাভাষীর মিনি ইন্ডিয়া খ্যাত ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বুক চিতিয়ে লড়াইয়ের ক্ষমতা রাখেন বাহুবলী অর্জুন-ই। এটা একবাক্যে মানেন ঘাসফুলের আদিরা। লড়াকু অর্জুন সিংয়ের আদি দরদী মনোভাবে তাই ভীষন চাঙ্গা ঘাসফুলের দুর্দিনের সৈনিকরা। 

যদিও কিছু পেটোয়া বাজারে 'আনকোড়া' কিছু নাম ভাসিয়ে দিয়ে নীচুতলার কর্মীদের বিভ্রান্ত করতে চাইছেন। আর এতেই ভীষণ চটেছেন বামেদের বিরুদ্ধে জীবন বাজি রেখে লড়াই করা ঘাসফুল কর্মীরা। তাদের আক্ষেপ, এক্সিডেন্টাল নেতা-কর্মীদের কাউকেই বামেদের ঠ্যাঙ্গারে বাহিনীর হাতে আক্রমনের শিকার হতে হয় নি। তারা জানেন না সিঙ্গুর কিংবা নন্দীগ্রাম কি জিনিস। 

ধুমকেতুর মতো আবির্ভাব হয়ে কেউ বিধায়ক হয়েছেন কিংবা কেউ সংগঠনের বড় পদ পেয়েছেন। ইদানিং দেখা যাচ্ছে কিছু পোর্টাল কারও ইন্ধনে তাবেদারিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। দেখা যাচ্ছে শাসকদলের নেতা-কর্মীদের থেকে ব্যারাকপুর কেন্দ্রের ঘাসফুলের প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়েই তারা বেশি উদ্বিগ্ন। 

তারা মনগড়া কিছু নাম বাজারে ভাসিয়ে দিচ্ছেন। কখনো প্রশাসনের কোনও উচ্চপদস্থ অধিকারিকের নাম, আবার কখনও গ্ল্যামার জগতের কারও নাম বাজারে প্রচার চালাচ্ছে। 
অথচ টগবগে বাম জমানায় শিল্পাঞ্চলের বুকে ঘাসফুলের পতাকা তুলে ধরা কান্ডারিকে তুলে ধরতে চাইছেন না ওই সকল পেটোয়া অনলাইন মিডিয়া। 

শিল্পাঞ্চলের আকাশ-বাতাস-মাটি যার হাতের তালুর মতো চেনা সেই লড়াকু বাহুবলীকে তারা মার্কস দিতে নারাজ। যদিও তাতে কিছু যায় আসে না। বামআমল থেকে তিনি জনসম্পর্ক অভিযান করে চলেছেন।  রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়ে বিপদে-আপদে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। তাঁর ভিত্তি কিন্তু জনতা জনার্ধন। 

মানুষের এত জনসমর্থন আছে বলেই তিনি বুক ফুলিয়ে সর্বদা একটাই কথা বলেন, নির্বাচনে শেষ কথা বলে জনতাই। 

বাম জমানায় কোনও বিধায়ক কিংবা মন্ত্রীর কাছ থেকে সার্টিফিকেট আনতে গেলে আগে শরনাপন্ন হতে হত এল সি এস কিংবা এল সি এমদের নিকট। তারপর মিলত সেই দরকারি নথিপত্র। কিন্তু জগদ্দলের মজদুর ভবনে তৎকালীন সলতে বিধায়ক অর্জুন সিংয়ের কাছে পৌঁছতে কোনও মাধ্যমের প্রয়োজন হত না। এখনও সেই পরিষেবা অটুট। 

বর্তমানে তিনি সাংসদ। তবুও জনসংযোগে তার বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি। যে কোনও প্রয়োজনে সরাসরি তাঁর কাছে পৌঁছে যাওয়া যায়। প্রয়োজন হয়না কোনও মাধ্যমের। শিল্পাঞ্চলের জনতা এটাই দেখতে অভ্যস্ত। 

মানুষের কাছে তিনি এতটাই জনপ্রিয়। স্যার ডাক শুনতে তিনি নারাজ। পরিবারের একজন সদস্যের মতোই দাদা কিংবা কাকু অথবা ভাই ডাক শুনতেই তাঁর বেশ পছন্দ। শুধু তাই নয়, বাড়ির পুজো থেকে উপনয়ন কিংবা বিবাহ-সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঘরের ছেলেই মতোই তিনি তাঁর সংসদীয় কেন্দ্রে হাজির হন। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৪-র লোকসভা নির্বাচন কঠিন লড়াই। গেরুয়া শিবির বাংলায় ৩৫ আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে। এমত অবস্থায় ঘাসফুলকে ব্যারাকপুর ধরে রাখতে হলে প্রয়োজন লড়াকু ইমেজের কোনও নেতাকে। রাজনীতির আঙিনায় 'আনকোড়া' কাউকে খাড়া করলে বিপদ অনিবার্য। 

এইমুহূর্তে ঘাস ফুলের আদি কর্মীরা সক্রিয়। একাংশের কথায়, সিপাহী বিদ্রোহের আন্দোলনের মাটি এই ব্যারাকপুর। এখানকার কর্মীরা লড়তে জানে। তবে গ্লামার দুনিয়া কিংবা প্রশাসনের কোনও আমলাকে চাপিয়ে দিলে লড়াই হবে ভঙ্গুর। ব্যারাকপুর কব্জায় রাখতে তাই বাহুবলীকেই তারা মনেপ্রাণে চাইছেন।

No comments:

Post a Comment