Wednesday, November 30, 2022

নৈহাটিতে বালি মনোজ ধৃত


নিজস্ব প্রতিনিধিঃ নৈহাটিতে অবৈধ ভাবে বালি তোলার ঘটনায় ফের পুলিশের জালে মনোজ দাস। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, নৈহাটির কল্যানী এক্সপ্রেসওয়ের কাছ থেকে পুলিশ তাঁকে পাকড়াও করে।

বালি মনোজ নামেই এলাকায় তাঁর পরিচিতি। বার বার গরিফা গঙ্গার পাড় ছাইঘাটে অবৈধ বালি উত্তোলনকে কেন্দ্র করে শিরোনামে উঠে এসেছে নৈহাটি। এই বালি কারবারে প্রথম থেকেই মনোজ দাস জড়িত। 

যদিও এই বিষয়ে বারংবার ফোন করা হলে পুলিশের কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

Friday, November 4, 2022

অতীত ভুললে ভবিষ্যৎ ডুববে, বলছেন শাসকদলের ব্রাত্য সৈনিকরা

বিল্টু কাশ্যপঃ অতীতকে স্মরনে রেখেই ভবিষ্যৎ এগোয়। কিন্তু উল্টো বলছেন স্বয়ং শাসকদলের আদি সৈনিকরাই। কে এমন বলছেন? তারই উত্তর খুঁজল 'খবর যুগান্তর'। 

দুদিন আগে ভাটপাড়া ও নৈহাটি বিধানসভার সীমান্তবর্তী ঘোষপাড়া রোডের ধারে একটি চায়ের দোকানে সাক্ষাৎ দুই মাঝবয়সীর সঙ্গে। চায়ের আসরে কয়েকজনের সঙ্গে ওই দুজন মাঝবয়সীও কথাবার্তা বলছেন। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তারা বিস্ময় প্রকাশ করছেন। চায়ের আসরে হঠাৎ-ই শাসকদলকে তুলোধনা শুরু করলেন ওই দুই মাঝবয়সী। 

রাগের কারন কি, প্রশ্ন করতেই ওনারা ক্ষেপে লাল। ওনারা বললেন, অতীত ভূললে ভবিষ্যৎ ডুববেই। ওনারাই পুরানো স্মৃতি রোমন্থন করলেন। টগবগে বাম জমানার ইতিহাস তুলে ধরলেন। বুঝলাম, এনারা তাহলে ঘাসফুলের দুর্দিনের সৈনিক। 

ওনারাই বলছিলেন, বামআমলে নৈহাটিতে ঘাসফুলের ঝান্ডা বইবার লোক ছিল না। রাতের আঁধারে দেওয়াল লিখন, পোষ্টার লাগানো সবই করেছি। বর্তমানে যারা আঙ্গুলি হেলাচ্ছেন, তাদের কেউ আবার সোদপুরে গিয়ে আত্মগোপন করে থাকতেন। স্কুল নির্বাচন হোক কিংবা পুরসভা কিংবা পঞ্চায়েত সকলেই ভয়ে ঘরে লুকিয়ে থাকতেন। দু-একজন সাহস করে বেরিয়ে ঠ্যাঙ্গারে বাহিনীর রোষানলে পড়তেন। 

তৎকালীন সময়ে আপদে-বিপদে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের একমাত্র বিরোধী সলতে 'বাহুবলী'ই আক্রান্ত কর্মীদের পাশে দাঁড়াতেন। আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেন। এখন টাকার পাহাড়ে বসে থাকা অহংকারীদের কি সেই দুর্দিনের কথা মনে পড়বে? বিলাসবহুল জীবনযাপনে হয়তো সবকিছু ভূলতে বসেছেন, এমনই প্রশ্ন তারা চায়ের আসরে বারবার তুলে ধরলেন। 

তবে এখানেই শেষ নয়। স্মৃতি রোমন্থন করলেন সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম আন্দোলনের কথাও। তৎকালীন সময়ে 'বাহুবলী' যেভাবে সমস্ত কিছুর যোগান দিয়েছিলেন। সেটাও তারা 'বমি' করলেন। আসলে তারা বোঝাতে চাইলেন, অতীতকে ভুলতে নেই। 

২০০৯ সালে 'জায়েন্ট কিলার'কে সঙ্গে নিয়ে ব্যারাকপুর লোকসভার এপ্রান্ত থেকে অপ্রান্ত চষে বেরিয়েছিলেন সেই 'বাহুবলী'ই। ২০১০ সালে পুরসভা নির্বাচনে জয়জয়কার হতেই দিন বদলে যায়। বামআমলের রিগিং মাস্টার, ঠ্যাঙ্গারে বাহিনীরাই জার্সি বদল করে ঘাসফুলে নাম লিখিয়ে নেয়। এতেই তাদের মতন দলের দুর্দিনের সৈনিকদের কোণঠাসা হয়ে পরবর্তীতে ঘরে বসে যেতে হয়েছে। 

গল্পের ছলে ওনারা অতীত আউরে চলেছেন। একঝলক  মুখের দিকে তাকাতেই দেখি, ওনাদের চোখ ছলছল করছে। বুঝলাম, মনের ক্ষত এখনও শুকোয় নিই। আসলে ওনারা দলটাকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবেসেছিলেন। বিনিময়ে পেয়েছেন শুধুই আঘাত।

 ২০১১ সালে রাজ্যে পরিবর্তন ঘটলেও, কেউই মনে রাখে নি ওদের। শুধু তাই নয়, ওনারা আক্ষেপের সুরেই বলছিলেন, এখন তো দলের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। দল না করেই অনেকেই পুরসভার টিকিট পেয়ে জনপ্রিতিনিধি হয়ে গিয়েছেন। ব্রাত্য সৈনিকদের কথায়, শীর্ষ নেতৃত্ব সব জেনেবুঝেও ধৃতরাষ্ট্রর ভূমিকায়। দুর্নীতিতে জজ্জ্বরিত হয়ে গাড্ডায় নিমজ্জিত হওয়ার পর নেতাদের মনে পড়ছে পুরানো কর্মীদের কথা। 

আলোচনায় এতকিছু উঠে আসার পর চায়ের ভার ফেলেই বেঞ্চ থেকে উঠে পড়লেন ওই দুই মাঝবয়সী। বললাম দাদা, আপনারা কোথায় থাকেন। মুখে উত্তর মিলল না। শুধু হাত দিয়ে ইশারায় বুঝিয়ে দিলেন তারা সাহিত্য সম্রাটের শহরবাসী।  চায়ের আড্ডার বসে থাকা মানুষজন বুঝতেই পারলেন না শ্রোতা একজন সংবাদ কর্মী। যদিও এই প্রতিবেদকের সঙ্গে সেদিন ছিলেন তাঁর সহধর্মিনীও।

Thursday, November 3, 2022

গরুপাচার, টেট কেলেঙ্কারি-সহ একাধিক ইস্যুতে জেরবার ঘাষফুলের কর্মীরা ব্যারাকপুরে লড়াকু ইমেজের নেতাকেই চায়

বিল্টু কাশ্যপঃ একদিকে বিরোধীদের সাঁড়াশি আক্রমন। অপরদিকে গরু-কয়লা পাচার,টেট কেলেঙ্কারি-সহ একাধিক ইস্যুতে জেরবার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। ঠিক এই মুহূর্তে দলের হাল ধরতে ব্যারাকপুর-দমদম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হিসেবে নিচুতলার কর্মীরা চাইছেন লড়াকু ইমেজের নেতাকে। 

শুধু নিচুতলার কর্মীরাই নন, একশ্রেণীর নেতারাও চাইছেন দলকে চাঙ্গা রাখতে লড়াকু মনোভাবাপন্ন কোনও নেতাকে সামনের সারিতে আনা হোক। তাদের বক্তব্য, দমদম-ব্যারাকপুর সংগঠনিক জেলার গোটা অঞ্চল যিনি হাতের তালুর মতন চেনেন। রাত-বিরেতে আক্রান্ত কর্মীদের নির্ভয়ে পাশে দাঁড়াতে পারেন। 

'ডিসেম্বর বিল্পবে'র ডঙ্কা বাজবে (শাসকের ওপর আঘাত ) বেশ কয়েকদিন ধরেই এই সুর শোনা যাচ্ছে গেরুয়া শিবিরের নেতাদের কন্ঠে। এমত অবস্থায় 'ব্লক' কিংবা বিধানসভা স্তরের নেতাকে জেলার দ্বায়িত্ব সঁপে দিলে, তিনি কি পারবেন দলের হাল ফেরাতে ? এমনই প্রশ্ন তুলছেন ঘাসফুলের আদি কর্মীরা। শুধু তাই নয়,  এতবড় জেলার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত দাপিয়ে বেড়ানো আদৌ কি সম্ভব হবে ব্লক কিংবা বিধানসভা স্তরের কোনও নেতার পক্ষে। 

সূত্র বলছে, কারও ইন্ধনে কেউ বাজারে লড়াকু ইমেজের নন, এমন নেতাদের নাম ভাসিয়ে দিচ্ছেন। এর পিছনে নিশ্চয়ই কোনও অভিসন্ধি আছে। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। পঞ্চায়েত ভোটের রেশ কাটতে না কাটতেই টাফ ফাইটের লোকসভা নির্বাচন। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচন মাথায় রেখে ঘাসফুলের শীর্ষ নেতৃত্ব সবদিক বিচার করেই যোগ্য ব্যক্তির হাতে 'ব্যারাকপুর-দমদম' জেলার ব্যাটন তুলে দেবেন। ধোপেও টিকবে না বাজারে নাম ভাসিয়ে কাউকে খুশি করার প্রয়াস।

Wednesday, November 2, 2022

পাল্টিবাজি নয়, 'খবর যুগান্তর' আছে যুগান্তরেই

বিল্টু কাশ্যপঃ ক্ষমতার অলিন্দে থাকতে সাধারণত রাজনৈতিক নেতাদের পাল্টি খেতে দেখা যায়। কিন্তু ডিজিটাল মাধ্যম রাতারাতি পাল্টি খায়, এটাও এখন দেখতে হচ্ছে শিল্পাঞ্চলবাসীকে। আর এই পাল্টিবাজির জেরে 'ভিউয়ার্স'(দর্শক বা পাঠক) রা হতচকিত হয়ে পড়ছেন। 

২০১৯ সালের মে মাসের পর একশ্রেণীর নেতারা যুগান্তরের মাথায় তকমা লাগিয়ে দিয়েছিলেন, 'যুগান্তর' নাকি শিল্পাঞ্চলের বাহুবলী নেতার পেটোয়া ডিজিটাল মাধ্যম। তবুও যুগান্তর সাহসের সঙ্গে নিজের স্ট্যান্ড বজায় রেখে চলেছে। একমাত্র 'যুগান্তর' সাদাকে সাদা, আর কালোকে কালো বলতে পিছুপা হয়না। কারন, যুগান্তরের সাংবাদিকরা ২৩-২৪ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশায় পরোটা বেলছেন। রাতারাতি বুম-ক্যামেরা নিয়ে হ্যালির ধূমকেতুর মতো আবির্ভাব হয়নি। 

কাঁচড়াপাড়া, হালিশহর,  নৈহাটি ও কাঁকিনাড়া অঞ্চলে গুমটি দোকানের মতোই গজিয়ে উঠেছে ডিজিটাল মাধ্যমের দোকান। প্রেসের সুবিধা নেওয়ার জন্য আনকোরা কিছু মানুষজন বুম বানিয়ে ময়দানে নেমে পড়েছেন। ডিজিটাল মাধ্যমের দৌরাত্ম্য এমন জায়গায় পৌছছে, পেশা-নেশার সঙ্গে সাংবাদিকতার পেশায় আসা প্রকৃত 'রিপোর্টার'রা ক্রমশ অন্তরালে চলে যাচ্ছেন। তাই টৈলিভিশন কিংবা দৈনিক পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকদের চিন্তা-ভাবনা করা উচিত। 

এবার আসা যাক, কিছু ডিজিটাল মাধ্যমের তাবেদারি নিয়ে। অভিযোগ উঠছে, ধূমকেতুর মতো গজিয়ে ওঠা কিছু ডিজিটাল মিডিয়া বুম-মোবাইল নিয়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের পিছনে ছুটে বেড়াচ্ছেন। রক্তদান শিবির কিংবা স্বাস্থ্য শিবির অথবা কারও শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে হাজির নেতাদের দৃশ্য লাইভ আকারে পরিবেশন করছেন। এরা কি সাংবাদিকতার অ-আ, ক-খ বোঝেন, তা নিয়েই বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে। পিছনে টিপ্পনি শুনতে হচ্ছে পেশাকে টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের। 

সম্প্রতি বীজপুরের একটি ডিজিটাল মাধ্যমের পাল্টি নিয়ে হৈ হুল্লোর শুরু হয়ে গিয়েছে অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমের প্রতিনিধিদের মধ্যে। এটা ঠিক, সকলের পক্ষে মেরুদন্ড সোজা রাখা এত সহজ নয়। একমাত্র 'যুগান্তর'ই পারে মেরুদন্ড শক্ত রেখে স্ট্যান্ড বজায় রাখতে। 

অভিযোগ উঠছে, নেতাদের নির্দেশ মতো বুম নিয়ে ছুটে বেড়িয়ে নিজেদের স্ট্যান্ড হারিয়ে ফেলছেন একশ্রেণীর ডিজিটাল মাধ্যমের প্রতিনিধিরা। কিন্তু 'খবর যুগান্তর' নিজেদের স্ট্যান্ড বজায় রেখে এগিয়ে চলেছে। কারও লেজুর ধরে নয়। বিজ্ঞাপন আদায়ে কারও কাছে মাথানত করতে রাজি নয় 'খবর যুগান্তর'। 

লক্ষ্য, মানুষের সমস্যা তুলে ধরা। শাসককে চাপে রেখে অন্যায় জনসমক্ষে প্রকাশ করা। এতে কারও চক্ষুশূল হলেও,পরোয়া করে না 'খবর যুগান্তর'। সংবাদ পরিবেশন দেখে আপনারাই বিচার করুন, 'খবর যুগান্তর' কারও পেটোয়া কিনা ?