Saturday, May 14, 2022

টেলিকম এডভাইসারী কমিটিতে চার প্রতিনিধির মনোনয়ন ব্যারাকপুর কেন্দ্রে


নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ব্যারাকপুর সংসদীয় কেন্দ্র থেকে টেলিকম এডভাইসারী কমিটিতে চার প্রতিনিধির নাম ঘোষণা করল কেন্দ্রের যোগাযোগ মন্ত্রক। এনারা হলেন নৈহাটির বাসিন্দা সুকুমার চৌধুরী ও বিকাশ সিং, গারুলিয়ার কুন্দন সিং এবং  ব্যারাকপুর তালপুকুর রোডের বাসিন্দা রনজয় দত্ত। তাঁদের প্রত্যেকের কাছে এডভাইসারি কমিটির সদস্য হওয়ার চিঠি এসে পৌঁছেছে। 
এই মুহূর্তে দেশের একমাত্র সরকারি টেলিকম সংস্থা ভারত সঞ্চার নিগম ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এই সংস্থার পুনরুজ্জীবন চাইছেন সকলেই। 

এই এডভাইসারী কমিটির নতুন এক সদস্য সুকুমার চৌধুরী জানালেন, বি এস এন এল সম্পর্কে বহু মানুষের একটা আবেগ রয়েছে। মোবাইল, ইন্টারনেট আসার পর থেকে বেসরকারি সংস্থার দাপট ছড়িয়ে পড়ে। বহু ক্ষেত্রে সরকারি পরিষেবার দিকে মানুষ আঙ্গুল তোলেন। যদিও তিনি বলেন, সদ্য কমিটিতে এসেছি। পরিষেবা নিয়ে মানুষের সুবিধা অসুবিধার কথা তুলে ধরার চেষ্টা করব। 

টি এ সি'র আর এক সদস্য বিকাশ সিং এই কাজের জন্য ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংকে ধন্যবাদ জানিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানালেন।

অর্জুনের জুট নিয়ে লড়াই ছাপ ফেলেছে গোটা বঙ্গে

বিল্টু কাশ্যপঃ ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের অর্থনৈতিক মাপকাঠি মূলত জুটমিল ঘিরেই। সঙ্গী কয়েকটি অন্যান্য কলকারখানা। কালক্রমে জুটমিলগুলো রুগ্ন হয়ে পড়েছে। 

নৈহাটির গৌরীপুর জুটমিলে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক কাজ করতেন। এই বন্ধ মিল নিয়ে রাজনীতি করে অনেকেই বিধায়ক ও সাংসদ হয়েছেন। ভোটের প্রাক্কালে মিল খোলার ধাপ্পা প্রতিশ্রুতি দিয়ে শ্রমিক মহল্লার ভোট লুঠেছে বাম-ডান সকলেই। কিন্তু গৌরীপুর জুটমিল যেই তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই রয়ে গেল। মিল চত্বর এখন শ্মশানে পরিণত। 

শুধু তাই নয়, বাম জমানাই হোক কিংবা ডান আমল, নেতা-নেত্রীদের আন্দোলনে ভিড় বাড়িয়েছিলেন জুটমিল শ্রমিকরাই। জুট শ্রমিকের ভোট ব্যাঙ্ককে পুঁজি করেই ব্যারাকপুর কেন্দ্রে সাংসদ হয়েছিলেন তড়িৎ বরণ তোপদার ও দীনেশ ত্রিবেদী। অথচ জুটমিল শ্রমিকদের ভাগ্যের চাকা বদলায়নি। 
এখন রাজনৈতিক নেতাদের নাম শুনলেই তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠেন বিপন্ন শ্রমিক পরিবারগুলো। নির্বাচনের ঠিক একমাস আগে ঘাসফুল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন শ্রমিক নেতা অর্জুন সিং। জায়েন্ট তৃণমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদীকে পরাস্ত করে ব্যারাকপুরের মসনদে বসেন একদা চটকল শ্রমিক লড়াকু নেতা অর্জুন সিং। 

ভাগ্যের এমনই পরিহাস, করোনা সংক্রমণের জেরে দুবছর লকডাউনেই কেটে গেল। করোনা কিছুটা স্থিতিশীল হতেই তিনি রুগ্ন জুটমিলগুলোকে চাঙ্গা করার লড়াইতে অবতীর্ণ হলেন। বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধার মতোই পাটশিল্প ও জুটমিল নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সূর চড়ালেন গেরুয়া শিবিরের প্রতিনিধি হয়েই। 

সরাসরি সংঘাতে নামলেন তাঁর নিজের দলের সরকারের বিরুদ্ধেই। নিশানা করলেন কেন্দ্রীয় বস্ত্রীমন্ত্রী ও জুট কমিশনারকে। জল বহুদূর গড়িয়ে ডাক পেয়ে দিল্লিতে গিয়ে বস্ত্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করলেন ব্যারাকপুর কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। 

কলকাতায় ফিরে তাঁর মন্তব্য, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই পাটের ঊর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার করবে কেন্দ্র। পাশাপাশি ট্যারিফ কমিশনের বিষয়ে একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। 

যদিও বিরোধীদের টিপ্পনি, তৃণমূলের যাবার পথ প্রস্তুত করতেই অর্জুনের পাটশিল্প ও জুটমিল নিয়ে আন্দোলন। 
তবে বিরোধীরা যতই টিপ্পনি করুক না কেন, অর্জুনের লড়াইয়ের ফসল হিসেবে পাটশিল্প কিংবা রুগ্ন জুটমিলগুলো চাঙ্গা হবার আশা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জুট নিয়ে  অর্জুন সিংয়ের লড়াই বঙ্গ রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।

Monday, May 2, 2022

হিংসার বর্ষপূর্তিতে সন্তু মন্ডল ও গুঁড়িয়ে দেওয়া চারটি পার্টি অফিস বিজেপির স্মৃতি নৈহাটিতে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ২'রা মে দিনটি বিজেপির কাছে কালো দিন। ভোট পরবর্তী হিংসার এক বছর পূর্ণ হল। সেদিন একুশের বিধানসভার ফলাফল প্রকাশ হতেই রাজ্য জুড়ে খুন, মারধর, বাড়িঘর, দোকানপাট ভাঙচুরের মতো অজস্র ঘটনায় উত্তাল হয়েছিল। 

শিহরন জাগানো দুটি ঘটনার মধ্যে পূর্ব কলকাতার বেলেঘাটা কাঁদাপাড়ার বাসিন্দা বিজেপি কর্মী অভিজিত সরকারকে বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে খুন। অপরটি উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দল থানার শ্যামনগরে রাহুতা এলাকার বৃদ্ধা শোভারানী মন্ডলের মৃত্যু। দুটি ঘটনায় তদন্ত  সিবিআই'র হাতে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও ঘটনা সরেজমিনে তদন্ত করেছিল।

বিজেপি কর্মীদের বক্তব্য, হিংসার বড় বড় ঘটনা গোটা দেশের মানুষ দেখেছে। কিন্তু গ্রাম বাংলার অজস্র ছোট ছোট ঘটনা যা স্থানীয় স্তরের কর্মীরা জীবন, জীবিকা, পরিবার হারানোর ভয়ে চোখ বুজে সহ্য করেছে। 

এদিন কলকাতার রাজপথে মিছিলে যোগ দিয়ে নৈহাটির বেশ কিছু বিজেপি কর্মী তাঁদের এক সহকর্মী সন্তু মন্ডলকে হারানোর কথা শোনালেন। নৈহাটির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে বেনেপুকুর পাড় এলাকায় তার বাড়িতে চড়াও হয়ে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা সন্তুকে বেধড়ক মেরেছিল। পরদিন কল্যানীর জহর লাল নেহেরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে সে মারা যায়। 

বঙ্কিম, হরপ্রসাদ, কেশব সেন, সমরেশ বসুর শহরে বাম জমানায় এই হিংসার ছবি কারো চোখে পড়েনি এমটাই মত স্থানীয়দের। 

এই এক বছরে বিরোধী শূন্য নৈহাটি। বিজেপি করা চলবে না। শাসানি, চোখ রাঙানি জারি আছে বলে অভিযোগ কর্মীদের। এতটাই রাগ ছিল যে এই শহরের পাওয়ার হাউস মোড়, গোয়ালা ফটক, গরিফা রাম ঘাট চৌমাথার কাছে এবং গরুরফাড়িতে বিজেপির চারটি দলীয় কার্যালয় জেসিবি দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।