নিজস্ব প্রতিনিধিঃ জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার মলম টাকা। শোক ভোলো, মুখ বোজো। সরকার তোমার পাশে। দু-চার দিনের হা হুতাশ তারপর যেইকে সেই। এটাই চ্যাম্পিয়ান রাজনীতি। রামপুরহাট গণহত্যা কান্ড এর থেকে ব্যাতিক্রম হতে পারে না। প্রশ্ন শুধু অপরাধী কে।
এতগুলো মানুষকে কুপিয়ে, পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার মাথাটা কে? ঘটনার পর তিন দিন কেটে গেছে। পুলিশ মাথাকে খুঁজে পায়নি। ঘটনার পর পুলিশের ডিজি রাজনৈতিক নেতার মতো বক্তব্য পেশ করেছেন। সিট ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রকৃত সত্য, আগুন লাগানো হয়েছে বলে ফেলেন। তার আগেই রামপুরহাটের এস ডি পিও ও থানার ওসিকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী বগটুই-এ গিয়ে ঠিক করে দেন কাকে ধরতে হবে। না তাঁর দলেরই ব্লক সভাপতি আনারুলকে ধরার নির্দেশ দিলেন পুলিশের ডিজিকে। ডিজিও নির্দেশ পেয়ে জো হুজুর করে তক্ষণাৎ বাহিনী পাঠিয়ে দিলেন আনারুলের বাড়িতে। শেষে তারাপীঠ থেকে আনারুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এমনকি মুখ্যমন্ত্রী স্বজনহারাদের সামনে দাঁড়িয়ে পুলিশকে বলে দিলেন, এমন ভাবে কেস সাজাতে হবে যাতে দোষী ছাড়া না পায়। সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের পরামর্শে সূঁচপূরের নমুনাও জুড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশ বোধহয় হাফ ছেড়ে বাঁচলো। যাক বাবা যার গোরু সে যখন জবাই দিতে বলছে আমাদের আর চাপ নিতে হবে না।
শাসক আর পুলিশের এই মেলবন্ধন বাংলার রাজনীতিতে দলিল হিসেবে উল্লেখিত। সূচপুর, নানুর, নেতাই-র পর নতুন সংযোজন বগটুই। আইন নাকি আইনের পথে হাঁটে। কিন্তু টাকা হাতে হাতে ঘোরে। সাক্ষী, প্রমান ছোটো আদালত থেকে বড়ো আদালতের দরজায় পৌঁছতে পৌঁছতে চটি খয়ে যায়।
বিচারের শেষ পরিনতি সিঙ্গুরের তাপসী মালিকের বাবা, পার্কসার্কাসের রিজওয়ানুরের মা, নন্দীগ্রামের নিহতদের পরিবার আজও দেখতে পাননি। প্রথম দিকে কিছু উলুখাগড়াকে গারদে ভরে দেওয়া হয়। কিন্তু অন্তরালে বহাল তবিয়তে থেকে যায় মূল মাথা। ওটা অবশ্য রাজনৈতিক মাথা।
রামপুরহাটের বগটুই-র ক্ষেত্রে একা আনিরুলের মাথা কাজ করেছে এটা তদন্তের বিষয়। আনারুল তাঁর নেতার নির্দেশ না মেনে এতবড় নৃশংস হত্যালীলা চালালো? মদতদাতা কেউ না কেউতো রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী আনারুলকে গ্রেপ্তারের নিদান দিতেই সেই নেতা বোধহয় একটু স্বস্তি পেলেন।
No comments:
Post a Comment