নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজ্য বিজেপির নির্বাচনী ওয়ার রুম হেস্টিংস-এ বুধবার প্রার্থী তালিকা নিয়ে বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে চুলচেড়া আলোচনার পর নামের তালিকা ফাইল বন্দী হয়ে রাতেই দিল্লীতে পৌঁছে গিয়েছে। সঙ্গে গিয়েছেন রাজ্য নির্বাচনী কমিটির পদাধিকারীরা। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বৈঠকে প্রার্থী তালিকায় চুড়ান্ত সীলমোহর পড়বে। এরই মধ্যে কয়েকটি কেন্দ্রে কিছু পরিচিত মুখের নাম ভেসে উঠলেও দলীয় তরফে কেউ মুখ খুলতে নারাজ। প্রার্থী সিলেকশন নিয়ে এতটাই কঠোর নেতৃত্ব, বিধানসভা পিছু দুই থেকে তিনটি নাম রেখেছে। ইতিমধ্যেই আলোচনার শিরোনামে উঠে এসেছে ব্যারাকপুর কেন্দ্র। উনিশের লোকসভার পর থেকে কলকাতার কাছে বিজেপির সব চেয়ে শক্ত ঘাঁটি এই ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল। লড়াকু নেতা অর্জুন সিং তৃনমূল ছেড়ে বেরিয়ে যেতেই জোড়াফুল শিবিরে ধ্বস নামে। এই কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভার মধ্যে চারজন বিধায়কই বিজেপির। নৈহাটি, জগদ্দল, আমডাঙা খাতায় কলমে তৃনমূলের দখলে। যদিও একমাত্র আমডাঙা বাদে বাকি দুটি বিধানসভায় লোকসভা ভোটের মার্জিনে তৃনমূল পিছিয়ে রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, সম্ভাব্য বিজেপি প্রার্থী হিসেবে ব্যারাকপুর কেন্দ্রে দাঁড়াতে চলেছেন প্রয়াত বিজেপি নেতা মনীশ শুক্লার পিতা পেশায় চিকিৎসক চন্দ্রমনি শুক্লা। অনেক আগেই থেকেই চন্দ্রমনি শুক্লাকে জনসংযোগের ক্ষেত্রে ময়দানে দেখা যাচ্ছে। ব্যারাকপুর কেন্দ্রের বিদায়ী বিধায়ক শীলভদ্র দত্তের খড়দহ কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হবার সম্ভবনা প্রবল। পানিহাটি কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উঠে আসছে। তিনি কংগ্রেস ছেড়ে সদ্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। শাসকদলের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় তাকে জেলও খাটতে হয়েছে। নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিং লোকসভা নির্বাচনে অর্জুন সিং জয়লাভের পর, তিনি ঘাসফুল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন। এবারে তাঁর নামের সঙ্গে আরও দুটি নাম সম্ভাব্যর তালিকায় রয়েছে। একজন দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, আরেকজন গত উপনির্বাচনে নোয়াপাড়া কেন্দ্রে বিজেপির হয়ে লড়াই দেওয়া সন্দীপ ব্যানার্জী। জগদ্দল কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়ার দৌঁড়ে চার মুখের নাম উঠে আসছে। যুব নেতা সৌরভ সিং ও বাগ্মী নেতা অরুন ব্রহ্মের নাম শোনা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রাক্তন জেলা সভাপতি উমাশঙ্কর সিংও রয়েছেন।
তবে পিছিয়ে নেই বর্ষীয়ান রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সদস্য অসিত বরণ আইচ। বাম জমানা কিংবা ঘাসফুল জমানা, এই কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে বরাবরই জয়ী হয়েছে বহিরাগত প্রার্থী। তবে শেষমেশ কার ভাগ্যে শিকে ছেড়ে, সেটাই এখন দেখার। কঠিন লড়াইয়ে ভাটপাড়ায় উপনির্বাচনে প্রথমবার পদ্মফুল প্রতীকে দাঁড়িয়ে তরুণ বিধায়ক পবন কুমার সিং জয়ী হয়েছিলেন। অত্যন্ত মার্জিত, শিক্ষিত, বিনয়ী পবনের প্রার্থী হওয়া নিশ্চিত। স্থানীয়দের দাবি, পবনের বিকল্প পবনই। নৈহাটি বিধানসভা কেন্দ্রে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে রাজ্য সম্পাদিকা ফাল্গুনী পাত্র ও রাজ্য যুব মোর্চার নেতা তাপস ঘোষের নাম উঠে আসছে। বিগত বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে গেরুয়া প্রতীকে দাঁড়িয়ে পরাজিত হয়েছিলেন ফাল্গুনী পাত্র। যদিও এই দুই মুখের যে কেউ একজন আমডাঙা কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
তবে নৈহাটিতে পাল্লা ভারী তাপসের। বীজপুরে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে রয়েছেন শুভ্রাংশু রায়ই। দ্বিতীয় কোনো নাম চর্চায় নেই। একুশে মোদী-শাহের পাখির চোখ বাংলায়। এবারে অত্যন্ত সর্তকভাবে প্রার্থী তালিকা তৈরি করছেন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মিলে। সেক্ষেত্রে জিততে পারবে গ্রহনযোগ্য এমন লড়াকু মনোভাবাপন্নকেই প্রার্থী করতে চায় গেরুয়া শিবির।
No comments:
Post a Comment