Thursday, July 8, 2021

সুদীপ্ত সেনকে দেখে 'ভুয়ো' বিষয়টিই গুলিয়ে গেছে এই বাংলায়

চিত্ত ওঝাঃ ভুয়োর কবলে বাংলা, নে চিৎকার-চেঁচামেছির রাজনীতি সামলা। ভুয়ো সরকারি অফিসার, ভুয়ো আইনজীবী, ভুয়ো বিচারপতি থেকে ভুয়ো পুলিশ কর্তা। কি না নেই এরাজ্যে। একটুও আড়ালে নয়, বাতি লাগিয়ে প্রকাশ্যে এরা ঘুরে বেড়াত। পুলিশ জানত না এটা কেউই আজ আর বিশ্বাস করে না। চর্চা দু-চার দিনের। তারপর যেইকে সেই।

ব্যারাকপুরের বাসিন্দা একসময়ে সরকারি বড় পদে দায়িত্ব সামলেছেন। অবসরপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তির সময়ে রাজ্যে চিটফান্ডের মতো কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছিল। তাঁর মুখ থেকে এখন এই মুখরোচক ভুয়ো ব্যাপার স্যাপারটা শুনে বেশ মজাদার মনে হয়েছে। যে দাবি তিনি তুলেছেন তা এক কথায় অনবদ্য। সত্যিতো পুলিশ কিছুই জানত না তা আবার হয় নাকি! একটি থানা এলাকায় কতগুলো মদ ও সাট্টার ঠেক আছে, অবৈধ কারবার কি কি চলে, প্রোমোটার ক'জন, অপরাধী কারা এরপর তিন-চার নম্বর ধান্দার সঙ্গে কারা কারা জড়িয়ে সব পুলিশের হাতের মুঠোয়। এসব ঘিরেই পুলিশের সহবাস। একদিনেই ভুয়ো বেরিয়ে এল অত বোকা ভাবা বোধহয় কাম্য নয়।

চিটফান্ড কান্ডের পর অতি সাধারণ মানুষের মনে ভুয়ো সংক্রান্ত বিষয়ে একটুও দাগ কাটছে না। বরং তারা হেসে উড়িয়ে দিচ্ছে। শুধু তির্যক ভাবে বলছে, ধুর যা করেছে বেশ করেছে। ওদের রেখে কামিয়েছে এখন ফেঁসে গিয়ে ঝেড়ে ফেলতে চাইছে। উদাহরন স্বরুপ সুদীপ্ত সেনকেই দেখিয়ে দিচ্ছে। 

রাজনীতি যে বাঙালির চিরশত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে এগুলো তার প্রকৃত নমুনা। কোনো ভয়ংকর ঘটনায়ও জাতির হৃদয় উদ্বেলিত হয় না। সব সয়ে নিয়েছে। কাজেই ভুয়ো বিষয়টি এখন গৌন। অবৈধ অর্থের দাপটে বহু শিক্ষিত, মার্জিত, শিরদাঁড়া সোজা রেখে চলা মানুষগুলো কয়েক দশক ধরে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে। বেঁচে থাকাটা এখন তাদের কাছে আশ্চর্য। মাথা না নোয়ানোর যন্ত্রনাটা তাদেরকে জীবন জীবিকা দিয়ে উপভোগ করতে হচ্ছে। বরং ভুয়োয় ভর করে বহু এলেবেলে জনপ্রতিনিধির জীবন ঝা চকচকে হয়ে উঠেছে। সেদিনও আদর্শের বুলি আওড়ানো মানুষগুলো কত তাড়াতাড়ি খুললাম খুল্লা মুলো গিলে নিল তা চোখের সামনে জনতা দেখল। গাড়ি, প্রাসাদোপম বাড়ি, ব্যাংক ব্যালেন্স এসব সত্যিই কি ভুয়ো? বাস্তবে স্কুল শিক্ষক থেকে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের লেনদেনেটা এই সময়ে দাঁড়িয়ে মোটেও ভুয়ো নয় বলছে এগিয়ে যাওয়া এই প্রজন্ম।

No comments:

Post a Comment